পলকার কথা ০০২

পলকার জন্য আমরা স্থায়ী কবর কিনিনি। এই সিদ্ধান্ত নেবার আগে অনেক ভাবতে হয়েছে আমাকে। পলকার জীবনের সেই শেষ একমাস যখন চলছে তখন থেকেই আমি ভাবতে শুরু করেছি। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি, অর্থাৎ ওর শরীর খারাপ হবার দিন পনের পর, যখন সব ডাক্তার জবাব দিয়ে দিয়েছেন তখনও আমরা মানতে রাজি ছিলাম না যে ওর জীবনের এটাই হয়ত অন্তিম মাস। কেনই বা ভাবব? ইন্টারনেট বলছিল কিডনি ফেইলিওর নিয়ে কোনও কোনও কুকুর তো ২-৪ বছরও বাঁচে। অনেকে তো আবার নিজেদের পোষ্যের কথাও উল্লেখ করেছে। তাহলে আমাদের পলকাই বা থাকবে না কেন? রুগ্ন কুকুর হয়ে থাকবে, কিন্তু থাকবে। প্রতিদিন যত্ন নিতে হবে, কিন্তু থাকবে। ১৪-১৬ বছর বাঁচবে না কিন্তু এখনই তো যাবার সময় হয়নি। তাই যে ডাক্তার দেখছিলেন তাঁর কথার পাত্তা না দিয়েই আমি আর অনিন্দ্য ছুটেছিলাম সল্টলেক এবং বেলগাছিয়া পশু হাসপাতালে। পলকা চলে যাবার দিনও হয়ত এত হতাশ হইনি যতটা সেদিন হয়েছিলাম। দুইজন অত্যন্ত ভালোমানুষ ডাক্তার (যাদের কেতাদুরস্ত চেম্বার নেই বটে কিন্তু অভিজ্ঞতা আছে) প্রফেশনাল ভাবে স্টেপ বাই স্টেপ বুঝিয়ে দিলেন যে কী হয়েছে আর কেন ওকে আর ফেরানো সম্ভব না। শুনলাম, বুঝলাম, আর ফিরে এসে পলকাকে কোলে নিয়ে স্থবির হয়ে বসেছিলাম আমরা তিনজন – আমি অনিন্দ্য আর স্নবি।

Continue reading “পলকার কথা ০০২”